#চন্দ্র নারায়ণ সাহা, রায়গঞ্জঃ রাত পার হলেই বিশ্ব পরিবেশ দিবস। কিন্তু তার আগে রীতিমতো চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিল পার্থেনিয়ামের বংশবৃদ্ধি। রায়গঞ্জ শহর থেকে বিভিন্ন গ্রামের দিকে চলে যাওয়া রাস্তা ঢেকেছে বিষাক্ত পার্থেনিয়ামে। এতে গ্রামে গঞ্জে শ্বাসকষ্ট, হাঁপানি, এ্যালার্জি জাতীয় রোগের বাড়তি প্রবনতা দেখা দিতে পারে বলে মনে করছেন পরিবেশ চিন্তকেরা।
রায়গঞ্জ শহর থেকে সরাসরি বিহারের দিকে চলে গিয়েছে একটি গ্রাম্য সড়ক। সড়কটি সুভাষগঞ্জ, চাপদুয়ার ও ঝিটকিয়া হয়ে বাহিন পর্যন্ত প্রসারিত। সেই সড়কেরই ঝিটকিয়া থেকে বাহিন পর্যন্ত ৩ কিমি রাস্তার দুধারে যেভাবে গজিয়ে উঠেছে বিষাক্ত পার্থেনিয়াম, তাতে স্কুল, কলেজের পড়ুয়া সহ স্থানীয় কৃষিজীবি মানুষের মধ্যে নানাধরণের রোগ ছড়িয়ে পড়তে পারে, এমনটাই উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন শহরের পরিবেশ কর্মীরা। একই পরিস্থিতি হেমতাবাদ মুখী রাজ্য সড়কে।
এমন পরিস্থিতিতে, রায়গঞ্জ বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূগোল বিভাগের অধ্যাপক ড. তমাল বসু রায় বলেন, বর্ষা শুরু হতেই এবার পার্থেনিয়ামের বাড়বাড়ন্ত শুরু হয়েছে। এর বৃদ্ধি হচ্ছে একেবারে গাণিতিক হারে। গ্রাম থেকে শহরে সব জায়গাই আজকাল এই বিষাক্ত উদ্ভিদটি দেখা মেলে। বাড়ির আশপাশে, রাস্তার ধারে, বন-জঙ্গলে বা ফসলের ক্ষেতে পার্থেনিয়াম জন্ম ও বিস্তার লাভ করে। তাই এর বংশ বৃদ্ধি রদ করা প্রয়োজন।
পশ্চিম বঙ্গ বিজ্ঞান মঞ্চের উত্তর দিনাজপুর জেলা কমিটির কার্যকরী সভাপতি অনিরূদ্ধ সিনহা বলেন, পার্থেনিয়ামের মূল উৎপত্তিস্থল মেক্সিকো। সেখান থেকে এই বিষাক্ত আগাছা ছড়িয়ে পড়েছে আমেরিকা, আফ্রিকা, ওয়েস্ট ইন্ডিজ, ভারত, পাকিস্তান, চীন, নেপাল, অস্ট্রেলিয়া, বাংলাদেশেসহ বিভিন্ন দেশে।ধনে পাতার গাছের মতো দেখতে এই গাছটির একটি নির্দিষ্ট বয়সে ফুল ফোটে। একটি গাছ বাঁচে তিন থেকে চার মাস।
রায়গঞ্জ স্কুল অফ জিওগ্রাফির সদস্য গোকুল সরকার বলেন, পার্থেনিয়ামের বীজ এতই ছোট যে সাধারণত গবাদিপশুর গোবর, গাড়ির চাকার কাদামাটি, পথচারীদের জুতোর তলার কাদামাটি, সেচের জল ও বাতাসের সঙ্গে এর বিস্তার ঘটে।
এইচএমটিএ’র সদস্য তাপস জোয়ারদার বলেন, পার্থেনিয়ামে রয়েছে বিভিন্ন ধরনের টক্সিন বা বিষ, যা মানুষসহ অন্যান্য প্রাণীদের জন্য ক্ষতিকর। পার্থেনিয়াম আগাছাযুক্ত মাঠে গবাদিপশু চরানো হলে পশুর শরীর ফুলে যায়, তীব্র জ্বর, বদহজমসহ নানা রোগের উপসর্গ দেখা দেয়। আক্রান্ত ব্যক্তির ঘনঘন জ্বর, অসহ্য মাথাব্যথা, হাঁপানি, ব্রঙ্কাইটিস ও উচ্চ রক্তচাপে ভুগতে পারে।
এরকম পরিস্থিতিতে স্থানীয় ৮ নম্বর বাহিন গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান আনিসুল আলি বলেন, বিষয়টি আমাদের নজরে এসেছে। শিগগিরই সাফ সাফাই অভিযানে নামা হবে।