#চন্দ্র নারায়ণ সাহা, রায়গঞ্জঃ রায়গঞ্জের সরকারি হোমে আশ্রয় পাওয়া মেয়েদের যখন বয়স ১৮ পেরিয়ে যাচ্ছে, তখন তারা আর থাকতে পারে না সেই হোমে। দীর্ঘদিন হোমে থেকে হাতের কাজ শিখলেও সাধারণ মানুষের সাথে মেলামেশার ক্ষমতা কম থাকে তাদের মধ্যে। এনিয়ে চিন্তায় ছিলেন হোমের দায়িত্ব প্রাপ্ত সরকারি আধিকারিকেরা। সেই সময়ই ওই কয়েকজন কিশোরীর জীবনে নতুন আলো জেলে ‘মসিহা’ হয়েছেন কর্ণজোড়া অফিস চত্বরের দোকানদার মিনতি সরকার, মামনি দেবনাথেরা। সরকারি আধিকারিকের অনুরোধে এরা নিজের নিষ্ঠা ও উদ্যোগে হোমের ৫ জন মেয়েকে কাজ শিখিয়ে স্বনির্ভর হওয়ার পথ দেখাচ্ছেন।
মিনতির প্রশিক্ষণে যারা কাজ শিখছে, তাদের মধ্যে রয়েছে মালা, চন্দ্রকলি, চামেলি ও গুড়িয়া — সকলের টাইটেল ‘পান্থ’। এরা সকলেই মুক ও বধির। প্রথমে এই মেয়েরা কিছু বলতেও পারত না, আত্মবিশ্বাসের অভাব ছিল স্পষ্ট। আজ তারা নিজেদের কথা বলতে শিখেছে, বাবা-মা ডাকার সাহস পেয়েছে। দেখে দেখে শিখছে, শেখাচ্ছে অন্যদেরও। গত মার্চ মাসের ৭ তারিখ থেকে তারা নিয়মিত কাজ করছে।
এছাড়া মামনি দেবনাথের কাছ থেকে কাজ শিখছেন কাজল পান্থ। মামনি নিজের অভিজ্ঞতা ও দক্ষতা দিয়ে যেভাবে কাজলকে শেখাচ্ছেন, তাতে তিনিও অত্যন্ত খুশি। কাজল তাকে ‘মা’ বলে ডাকে। কাজ শেষ করে মেয়েরা যখন চলে যাবে, সেই ভাবনায় মন খারাপ হয় মামনি, মিনতিদের।
এইসব মেয়েদের জীবনে মিনতিরা হয়ে উঠেছেন সত্যিকারের মসিহা। শুধু কাজ শেখানো নয়, তারা শিখিয়েছেন আত্মবিশ্বাস, সম্মান আর ভবিষ্যতের স্বপ্ন দেখার সাহস। সমাজে এই ধরনের উদ্যোগ আরও বাড়ুক — এটাই সকলের কাম্য।
রায়গঞ্জের মহকুমাশাসক কিংশুক মাইতি বলেন, আমরা ওই সরকারি হোমে সবকিছু শেখাই। কিন্তু বাস্তব জীবনের অভিজ্ঞতা এরা এখানে এসে শিখছে। মেয়েরা কাজ শিখে স্বনির্ভর হোক, সেই উদ্দেশ্যেই এমন উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।