
#মালবাজার: জীবিত ব্যক্তিকে মৃত সাজিয়ে প্রভিডেন্ট ফান্ডে ক্লেইম করা হলো। ওই ব্যক্তি জানেই না যে তার ডেথ সার্টিফিকেট মাল পৌরসভা থেকে ইসু হয়েছে। এতেই আবারো জাল সার্টিফিকেট কাণ্ডে মাল পৌরসভার নাম জড়ালো। এই ঘটনায় সোচ্চার বিরোধীরা। জানাগেছে, আলিপুরদুয়ার জেলার বীরপাড়া সংলগ্ন ডিমডিমা চাবাগানের কারখানার কর্মী জীবিত জয়পাল মছুয়াকে মাল সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে মৃত দেখিয়ে মাল পৌর সভা থেকে গত ২৪ আগষ্ট একটি ডেথ সার্টিফিকেট ইস্যু হয়।

সেই সার্টিফিকেট, আধার কার্ড সহ অন্যান্য নথিপত্র জাল করে এক অসাধু চক্র জলপাইগুড়ি প্রবিডেন্ট ফান্ড দপ্তরে প্রাপ্য অর্থের ক্লেইম করে। সেই ক্লেইমে কিছু অসঙ্গতি থাকায় প্রবিডেন্ট ফান্ড দপ্তর থেকে ডিমডিমা চাবাগান কর্তৃপক্ষের কাছে চলতি এপ্রিল মাসের প্রথম সপ্তাহে ভেরিফিকেশনের জন্য পাঠায়। এরপর এই বিষয়টি জানাজানি হয়। এ নিয়ে চা বাগানে দাঁড়িয়ে জয়পাল মছুয়া বলেন, আমি চা বাগানের অফিস থেকে গত চৌদ্দই এপ্রিল বিষয়টি জানতে পারি এবং গত ১৬ এপ্রিল বীরপাড়া থানায় লিখিত অভিযোগ জানাই। চা বাগানের পিএফ ক্লার্ক বলেন, আমরা বিষয়টি জানতে পারার সাথে সাথেই জয়পালকে ডেকে জানাই। ওই ক্লেইমের সাথে ম্যানেজারের যে সার্টিফিকেট রয়েছে সেটা জাল। সেখানেই দেখা যায় তার ডেথ সার্টিফিকেট মাল পৌরসভা থেকে ইস্যু হয়েছে।

উল্লেখ্য, গত আগস্ট মাসে পৌরসভার জন্ম মৃত্যু নিবন্ধীকরণ দপ্তরের দায়িত্বে ছিলেন প্রসেনজিৎ দত্ত নামের এক কর্মী। গত নভেম্বর মাসে উঠে আসে আফগান নাগরিকদের জন্ম সার্টিফিকেট ইস্যু। তখনই জানা যায় মাল পৌরসভা থেকে বেশ কিছু বার্থ ও ডেথ সার্টিফিকেট দেওয়া হয়েছে। এরপরেই পৌরসভা প্রসেনজিৎ দত্তকে শোকজ করে এবং পরবর্তীকালে তৎকালীন চেয়ারম্যান স্বপন সাহা প্রসেনজিৎ দত্তের বিরুদ্ধে মাল থানায় এজাহার করে। তারপর থেকে অভিযুক্ত প্রসেনজিৎ দত্ত গা ঢাকা দিয়ে আছে।

এরপরেই প্রশ্ন উঠেছে মাল পৌরসভা থেকে এইরকম আর কত সার্টিফিকেট ইস্যু হয়েছে। এ নিয়ে সোচ্চার হয়েছেন বিজেপির মাল টাউন মন্ডলের সভাপতি নবীন সাহা। তিনি বলেন, এটা হিমশৈলের চুড়ামাত্র। তদন্ত হবে আরো অনেক তথ্য প্রকাশে আসবে। পুলিশ নিরপেক্ষ তদন্ত করে সত্য প্রকাশ করুক। এ নিয়ে মাল পৌরসভার চেয়ারম্যান উৎপল ভাদুড়ী বলেন, বীরপাড়া থানা থেকে একটা নোটিশ এসেছে। আগামী সোমবার জরুরী ভিত্তিতে এই বিষয়ে বৈঠক ডাকা হবে সেখানে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নিয়ে বীরপাড়া থানায় জানানো হবে।

প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, আফগান নাগরিকদের জন্ম সার্টিফিকেট ইস্যু কাণ্ডে তদন্ত চলাকালীন এই ঘটনা প্রকাশ্যে আসতেই গুঞ্জন শুরু হয়েছে। জানা গেছে এক অসাধুচক্র এভাবেই জাল নথিপত্র তৈরি করে বিএফ দপ্তরে ক্লেইম করে
চা বাগানের শ্রমিকদের জমা করা অর্থ হাতিয়ে নিচ্ছে।




