Explore

Search

April 11, 2025 1:17 am

IAS Coaching

চমকপ্রদ গবেষণা রায়গঞ্জ বিশ্ববিদ্যালয়ে, পশ্চিম ও দক্ষিণ ভারতে শহুরে মহিলাদের স্থুলতা বাড়ছে দ্রুত

#রায়গঞ্জ: এক চমকপ্রদ গবেষণার ফল সামনে আনলেন রায়গঞ্জ বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূগোল বিভাগের একদল গবেষক। তাদের দাবি, বিভিন্ন কারনে দেশের প্রজননক্ষম মহিলাদের মধ্যে বাড়ছে স্থূলতা। পূর্ব ও মধ্য ভারতের তুলনায় পশ্চিম ও দক্ষিণ ভারতের মাঝ বয়সী শহুরে মহিলারা ভুগছেন স্থুলতার সমস্যায়। এতে তাদের মধ্যে তৈরি হচ্ছে একাধিক স্বাস্থ্য জটিলতা। খুব শিগগিরই সচেতন না হলে আগামী দিনে কঠিন সমস্যায় পড়বে দেশের জন্মহার। এই গবেষণায় নেমেছেন রায়গঞ্জ বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক প্রিয়া দাস, শুভদীপ সাহা, তনু দাস, পার্থ দাস এবং ভূগোল বিভাগের অধ্যাপক ড তমাল বসু রায়।

তাদের দাবি, ১৫ থেকে ৪৯ বছর বয়সী মহিলাদের এই স্থূলতার গবেষণা করা হয়েছে। গবেষকদের মতে,৷ স্থুলতা ভারতের সবচেয়ে উপেক্ষিত জনস্বাস্থ্য সমস্যা হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে। কম বয়সে গর্ভপাত, ভ্রূণহত্যা, সিজার, ফাষ্ট ফুড খাওয়া সহ একাধিক কারনে মহিলারা স্থূল হচ্ছেন বলে উঠে এসেছে গবেষণায়। গবেষক প্রিয়া দাস বলেন, আমাদের এই গবেষণার লক্ষ্য হল শহুরে স্থূল নারীদের জেলা শনাক্ত করা এবং কি কারনে সেখানে স্থুলতা বাড়ছে, তার কারণগুলোর সাথে এর স্থানীয় সম্পর্ক বিশ্লেষণ করা।

বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড তমাল বসু রায় বলেন, উন্নত এবং উন্নয়নশীল দেশ উভয় ক্ষেত্রেই স্থূলতা বর্তমানে সবচেয়ে সাধারণ কিন্তু উপেক্ষিত জনস্বাস্থ্য সমস্যা হিসেবে দেখা দিয়েছে। শরীরে অস্বাভাবিক বা অতিরিক্ত চর্বি জমা হওয়া, যা মানব স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে, সেটিকেই স্থূলতা বলা হয়। স্থূলতা পরিমাপের জন্য সাধারণত শরীরের ওজন, উচ্চতা এবং বয়সের ভিত্তিতে গণনা করা বডি মাস ইনডেক্স ব্যবহার করা হয়। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে, যাদের বডি মাস ইনডেক্স ৩০ এর বেশি হয়, তাদের স্থূল বলে বিবেচনা করা হয়। তাঁর কথায়, স্থূলতা সাধারণত তখনই দেখা দেয় যখন একজন ব্যক্তি যতটুকু শক্তি গ্রহণ করেন তার তুলনায় কম পরিমাণ শক্তি ব্যয় করেন, ফলে শরীরে অতিরিক্ত চর্বি জমতে শুরু করে এবং ওজন বৃদ্ধি পায়। গত কয়েক দশকে বিশ্বব্যাপী স্থূলতার ঘটনা ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে।

গবেষকেরা বলেন, যাদের বাচ্চা হয়নি, বিয়ে হয়নি এমন মহিলাদের বাদ দিয়ে আমরা ১৫ থেকে ৪৯ বছর বয়সী ১ লক্ষ ৭০ হাজার ১১১ জন শহুরে মহিলার তথ্য সংগ্রহ করি। এদের কেউ মধ্যে ৭৩ শতাংশ মহিলা ইতিমধ্যেই স্থূলতার শিকার হয়েছেন। কি কারণে শহরের মহিলারা স্থূল হচ্ছেন, জানতে চাইলে গবেষকেরা বলেন, উচ্চ শিক্ষিত মহিলা, আর্থিক ভাবে ধনী মহিলা, রাস্তার ধারে তৈরি হওয়া চটজলদি খাবার খাওয়া মহিলা, সিজারিয়ান ডেলিভারি হওয়া মহিলা এবং গর্ভপাত করা মহিলারা এতে বেশি আক্রান্ত হচ্ছেন। এতে স্বাভাবিক ভাবেই প্রজনন শক্তি হ্রাস পেয়েছে। ফলে জন্মহারে প্রভাব পড়েছে। ড. তমাল বসু রায় বলেন, এক্ষেত্রে পূর্ব ও মধ্য ভারতের মহিলাদের চেয়ে পশ্চিম ও দক্ষিণ ভারতের মহিলারা সবচেয়ে কঠিন পরিস্থিতিতে আছেন। তবে, পূর্ব ভারতের মহিলারা সারা ভারতের তুলনায় অনেক বেশি সুস্থ বলে উল্লেখিত হয়েছে গবেষণায়।

এই গবেষণায় ২০১৯-২০২১ সালের জাতীয় পরিবার স্বাস্থ্য সমীক্ষা এর তথ্য ব্যবহার করা হয়েছে বলে জানালেন গবেষকেরা। তাদের মতে, এই গবেষণায় ভারতের ৭০৭টি জেলার মহিলাদের তথ্য থেকে বোঝা যায়, জরুরি ভিত্তিতে কিছু অশনি সংকেত যুক্ত জেলা গুলিতে সরকারি হস্তক্ষেপ করা প্রয়োজন। এক্ষেত্রে পাঞ্জাব, কেরালা, তামিলনাড়ু কর্ণাটক, তেলেঙ্গানা, অন্ধ্রপ্রদেশ এবং মহারাষ্ট্রের কিছুটা অংশ বিপদজনক ভাবে চিহ্নিত হয়েছে। এই রাজ্যগুলোর প্রায় প্রতিটি জেলায় উচ্চতর সামাজিক-অর্থনৈতিক অবস্থানে থাকা শহুরে নারীদের প্রতি বিশেষ মনোযোগ দেওয়া উচিত। নইলে সুগার, প্রেসার, অস্টিওআর্থারাইটিস, আলঝাইমার্স, ডিপ্রেশন, ক্যান্সার রোগের প্রবনতা বাড়বে।

Advertisement
Live Cricket Score
upskillninja